ডিজিটাল মার্কেটিং বা ফেসবুক মার্কেটিং করে সর্বোচ্চ সেলস জেনারেট করার পলিসিস: নাজমুল হাসান
বর্তমানে ব্যবসার প্রচার প্রচারণার সবচেয়ে বড় ও উন্নত মাধ্যমটির নাম হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। অনেক ভাবেই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারেন আপনার ব্যবসায় বাণিজ্যকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে কিন্তু যে মাধ্যমেই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করতে চান না কেন আপনাকে এই আর্টিকেলটি আগে পড়ে নেওয়া অনুরোধ করবো। কারণ হাজার হাজার মানুষ ডিজিটাল মার্কেটিং করেও হতাশ শুধু নিচের এই বিষয়গুলো না জানার ও অনুশীলন না করার কারণে। তাই প্রথমে জেনে নেই ডিজিটাল মার্কেটিং কী, ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন এবং কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করলে আপনি ব্যবসায়ে সফল হতে পারবেন যে সফলতা মানে শুধু কিছু সেলস না। বাজারে আপনাকে একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও ধারাবাহিক সেলস জেনারেট করার মতো ব্রান্ড ভ্যালু তৈরি করে দিবে।
উচ্চগতির ইন্টারনেটের বর্তমান যুগে ঘরে বসে মানুষ বিশ্বের সব খবরাখবর রাখতে পারছে, যাকে আপনি বলতে পারেন পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। যাকে আমরা বলি অনলাইনের যুগ যেখানে ব্যবসা, পড়াশুনা, খেলাধুলা, প্রতিযোগিতা, পরীক্ষা, সভাসমাবেশ, কেনাবেচা সবই হয় ঘরে বসে। পৃথিবীর বড় বড় টেক জায়ান্টরা খুলে বসেছে নতুন নতুন মাধ্যম। ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, টুইটার, লিংকইনড সহ আরো কত মাধ্যম। যেখানে আপনি ব্যবসাও করতে পারবেন সাথে সাথে আপনি করতে পারবেন আপনার ব্যবসার প্রচার প্রচারণা। আপনার পন্য বা সেবা যেই ধরনেরই হোক না কেন এই সকল মাধ্যমগুলোতে আপনি সবধরনের কাস্টমারই পাবেন অল্প খরচে ও অল্প সময়ে সাথে থাকছে আপনার মূল্যবান কাস্টমারদের না হারানো নিশ্চয়তা। এখন নিশ্চয়ই প্রশ্ন উঠছে না হারানো নিশ্চয়তা আপনি দিচ্ছিন কিভাবে। যদি তা বুঝতে চান তবে একবার চিন্তা করুন, দিন দিন ইন্টারনেট ইউজার এর সংখ্যা কি বাড়ছে না কমতেছে, সাথে বিভিন্ন কাজে মানুষের ইন্টারনেট নির্ভরতা কি কমতেছে না বাড়তেছে? উত্তর যদি হয় হ্যাঁ বাড়তেছে, তবে নিশ্চিত ধরুন আপনার সেলস ও কাস্টমার সংখ্যাও বাড়তেছে। শুধু আপনাকে সঠিক পলিসিতে ডিজিটাল মার্কেটিংর এর বিভিন্ন সেবা ও টুলস ব্যবহার করতে হবে। সেই প্রেমিকের মতো হওয়া যাবে না যে, রাস্তায় দেখেই হুট করে পথ আটকিয়ে ”ভালবাসা দিবি কিনা বল” বলে প্রেম নিবেদন করবেন বরং আপনাকে আপনার বংশ পরিচয়সহ আপনার সুপুরুষতা বিষয়গুলো তুলে ধরে তাঁর মন জয় করেই নিবেদন করতে হবে তবেই রমনী আপনার প্রেমের নিবেদনে সায় দিবে। চলুন ঠিক কিভাবে আমাদের অডিয়েনস কে কাস্টমারে পরিনত করা যায় ডিজিটার মার্কেটিংর এর ব্যবহার করে তা জেনে নেই।
প্রথমত আপনার পণ্যটি কোন ক্যাটাগরির কাস্টমারের কাছে চাহিদা সম্পূর্ণ তা বিবেচনা করে সে অনুযায়ী সঠিক তথ্য ও আকর্ষণীয় কনটেন্টের মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। পণ্যের ধরণ ও চাহিদানুযায়ী আপনাকে কনটেন্ট সাজাতে হবে। আপনি কোন ডিজিটাল মাধ্যম কে ব্যবহার করে মার্কেটিং শুরু করবেন তা ঠিক করতে হবে এবং সেই ডিজিটাল মাধ্যমটি সম্পর্কে আপনাকে ভাল জ্ঞান রাখতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং সাধারণত অনেক প্রকারের হয়ে থাকে তবে ছয়টি প্রকার অন্যতম, যেমন, কনটেন্ট মার্কেটিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং, সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, ওয়েব এনালাইটিক্স। এসব গুলো মার্কেটিং থেকে সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং বেশি জনপ্রিয় ও অধিক পরিমান সেলস বা রেভিনিউ জেনারেট করে। কিন্তু সেই ফল ভোগ করতে হলে আপনাকে অনুশীলন করতে হবে সঠিক পদ্ধতি ও ফলো করতে হবে বিশ্ব স্বীকৃত নিয়ম। চলুন জানি সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং কী ও কী সেই নিয়ম ও পলিসি যা অনুসরণ করলে আপনি অর্জন করবেন একটি হাই ব্রান্ড ভ্যালু নির্ভর একটি ব্যবসায়িক পরিচিত ও ব্যাপক সেলস যা দিবে আপনাকে প্রচুর রেভিনিউ।। সাধারনভাবে বলতে গেলে আমরা প্রতিদিন ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর মাধ্যমে সোসাল কমিউনিকেশন এর জন্য যে সাইট গুলো ব্যবহার করে থাকি, যেমন ফেসবুক, টুইটার, পিন্টারেস্ট, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, রেডিট, টামবলার, লিংকডিন সেগুলো হল সোসাল মিডিয়া। আর এ সব মাধ্যমে এর ব্যবহারকারীদের নিকট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সেবা ও পণ্যে যে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তাই হলো সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়, ফেসবুক মার্কেটিং, গুগলে দিয়ে বলে গুগল মার্কেটিং, লিংকডিন এ দিলে বলে লিংকডিন মার্কেটিং। যেখানেই আপনি বিজ্ঞাপন দিন না কেন আপনাকে এই তিনটি পদ্ধতি বা ধাপ অনুশীলন করতে হবে। তবেই আপনি টেকসহ ও লাগসই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সেলস জেনারেট করতে পারবেন।
1. Brand Awareness - Inform about your products or service (Min 21 Days) -Impression/Reach – বাজারে একটা পন্য বা সেবা বিক্রি করা পূর্বে আপনাকে আপনার ব্রান্ড সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। প্রথমেই আপনি একটা বড়সংখ্যাক মানুষের কাছে আপনার ব্রান্ডের নামটা প্রচার করুন। খুবই ছোট একটা প্রচার যেখানে আপনার ব্রান্ড লোগো, ব্রান্ড রং, ও ট্রেন্ডটা উপস্থাপন করুন। এটা সর্বনিম্ম ২১দিন হতে পারে। বিষয়টা এমন হবে যে, যখন আপনি আপনার ব্রান্ডের পন্য বা সেবা বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দিবে তখন যেন সে এটার মনে করতে পারে ও, এটা তো সেই ব্রান্ডের পন্য বা সেবা এটার অমুক এই ব্রান্ডের কথা বলেছে প্রচার করেছে।
2. Consideration - Let them explore of your products or service (Min 21 Days) - Web traffic যখন আপনার পণ্য বা সেবা গ্রহনে আগ্রহী ক্যাটাগরির কাস্টমারের নিকট আপনার ব্রান্ড পরিচিতি তুলে ধরতে পেরেছেন এবার তাদের কাছে তুলে ধরুন আপনারে পন্যের বা সেবা গুনাগুন ও উপকারিতা বা কি সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। যেমন ধরুন আপনি বিক্রি করেন কদুর তেল আপনি সবার আগে কাস্টমারকে অল্পতে বলুন আপনার তার কি উপকারিতা হয়। যদি প্রথমেই আপনি এমন বলেন, যে এটা এই এই উপাদানে তৈরি সে হয়তো আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু আপনি যদি বলেন, এই কদুর তৈল ব্যবহারে রাতে ভালো ঘুম হয় ও দুশ্চিতা দূর হয়। তবে কাস্টমার এই তৈল ব্যবহারে উপকারিতা বুঝতে আগ্রহী হতে পারে অধিক তখন সে আপনার সেবা বা পণ্য সম্পর্কে আরো জানলো বা জানার চেষ্টা করবে।
3. Conversion - Push your potential customers to purchase your products or service (offer available) - Add to cart/Checkout/Sales যখন আপনার পন্যে আগ্রহ আছে ও আপনার পন্য সম্পর্কে জানে এমন কাস্টমারকে কিছু সুন্দর সেলস অফার দেন তবে খুব সহজেই সে আপনার পন্য বা সেবা ক্রয় করবে। এখন চিন্তা করুন তো, যাদের কে আপনি আপনার পন্য পরিচিতি জানিয়েছেন তারা সবাই তো আর প্রথম সেলস অফারে আপনার পন্য বা সেবা ক্রয় করেন নি কিন্তু তাদের আপনার পন্যে আগ্রহ আছে এবং সে আপনার পন্য সম্পর্কে জানে পরবর্তীতে তাদের যদি নতুন নতুন অফার দিয়ে সেলস এর বিজ্ঞাপন দেওয়া যায় তবে আর্ন্তজাতিক সমিক্ষা বলে আপনার সেলস দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার একটা ব্রান্ড ভ্যালু তৈরি হবে যা আপনাকে মার্কেটে দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসায় টিকিয়ে রাখবে।
এবার চিন্তা করুন তো যদি আপনি এই তিনটি ধাপ অনুসরণ না করে যদি হুট করেই কাউকে একটা পন্য বা সেবা কিনতে বলেন সে কতটুকু আপনার পন্য বা সেবা ক্রয় করবে। আর্ন্তজাতিক সমিক্ষা বলে এ ধরনের বিজ্ঞাপনে আপনি বেশি হলে ১-২ শতাংশ সেলস জেনারেট করতে পারবেন। তাই আসুন যথাযথভাবে নিয়ম মেনে ডিজিটাল মার্কেটিং করে অধিক মুনাফা অর্জন করি।
No comments:
Post a Comment